সর্বশেষ খবর

Earnings through advertising সবার আগে সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।

২৩.৭.১৭

H. S. C. RESULT 2017 ALL NEWS

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এবার মোট পাশের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। আজ রোববার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল হস্তান্তর করেছেন। এসময় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। এরপর সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় ১০টি শিক্ষা বোর্ডের গড় পাশের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এদিকে বেলা একটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত জানানো হবে। এই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই সারা দেশের পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনেও ফল জানা যাবে। ২৪ থেকে ৩০ জুলাই ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আগের মতোই নির্ধারিত পদ্ধতিতে টেলিটক থেকে আবেদন করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৫ মে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের বাইরের সাতটি কেন্দ্র থেকে ২৫৯ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৪৪ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ। তাদের মধ্যে ৪৬ জন জিপিএ -৫ পেয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এই ফলাফল প্রকাশ করেন। কাতারের দোহায় অবস্থিত বাংলাদেশ মাসহুর উল-হক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ হতে ৬৮জন, আবুধাবির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৪ জন, বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১৬ জন সউদী আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ অবস্থিত বাংলাদেশ ইনটারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে যথাক্রমে ৬৫ ও ৬১ জন শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৪ জন এবং ত্রিপলির বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত ১০ বছরের মধ্যে এবার পাসের হার সবচেয়ে কম। ২০০৭ সালে পাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর পরের নয় বছর পাসের হার বেশি হলেও এ বছর তা কমে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৯১। ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তি দুটোই গতবারের চেয়ে কমেছে। ১০টি বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কারণে এবার পাসের হার ও জিপিএ ৫ কমেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পাসের হার, জিপিএ ৫ পাওয়া, শতভাগ পাস ও শূন্য পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সব সূচকেই অবনতি হয়েছে এবার। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ৫.৭৯ কম। গত বছরের তুলনায় এবার সারা দেশে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ২০ হাজার ৫৫০ জন। সামগ্রিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৭ সালের পর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এটাই সবচেয়ে খারাপ ফল। বিগত কয়েক বছর ক্রমাগত উন্নতি করলেও ২০১৫ সালে পাসের হার কমে গিয়েছিল। সে বছর পাসের হার ছিল ৬৯.৬০ শতাংশ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৭ সালে পাসের হার ছিল ৬৫.৬০। ২০০৮ সালে ৭৬.১৯। ২০০৯ সালে ৭২.৭৮। ২০১০ সালে ৭৪.২৮। ২০১১ সালে ৭৫.০৮। ২০১২ সালে ৭৮.৬৭। ২০১৩ সালে ৭৪.৩০। ২০১৪ সালে ৭৮.৩৩। ২০১৫ সালে ৬৯.৬০। ২০১৬ সালে পাসের হার ছিল ৭৪.৭০ শতাংশ। আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল) এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ডিআইবিএস (ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় আজ। সকালে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের নিয়ে গণভবনে পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। দুপুর ১টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। দুপুর ২টা থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোনে এসএমএস এবং নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফল জানতে পারে। পরীক্ষার খাতা ভালোভাবে মূল্যায়নের কারণেই এমন ফল হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, ‘এবার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম পাস করেছে। পাস কম করায় আমরা বিস্মিত হইনি। পরীক্ষার খাতা ভালোভাবে মূল্যায়ন করার কারণেই এ ফল হয়েছে। গত মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষাতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এসএসসিতে গতবারের চেয়ে ৮ শতাংশ কম পাস করেছে। সে ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এইচএসসিতে কম খারাপ হয়েছে; এটা সাফল্য।’ ‘আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি, যার অধীনে পরীক্ষার খাতাগুলো বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। এখানে ঢালাওভাবে খাতা মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। প্রথমে আমরা প্রধান পরীক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। পরে তিনি অন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। খাতা দেখার বিশেষ মূল্যায়নের কারণেই ফলের এই পার্থক্য হচ্ছে। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই, এটা আমাদের সাফল্য। ভবিষ্যতে এটা ধীরে ধীরে একটা স্থির অবস্থায় আসবে,’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘খাতা দেখার এই পদ্ধতিতে সবাই একমত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমও এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করেছে।’ এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো ফল করেছে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এবার ২ দশমিক ৮২ ভাগ বেশি পাস করেছে। মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ৮ হাজার ৮৬৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন। এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪২ জন। গতবারের চেয়ে এবার প্রায় ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পাস করেছে। গত ২ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে শুরু হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১৫ মে। এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন, ছাত্রী ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। পাসের হার বাড়লেও সিলেট বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। গত বছর ১ হাজার ৩৩০ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও এবার পেয়েছে ৭০০ জন। সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শামসুল ইসলাম রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, এবার মোট ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী সিলেট বোর্ড থেকে এইচএসসিতে বসেছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছে ৪৬ হাজার ৭৯৭ জন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, গত বছরের মত এবারও ইংরেজিতে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এ বিষয়ে বার্ডে পাসের হার এবার ৮২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ইংরেজির পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পরিসংখ্যান ও উচ্চতর গণিতে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করায় এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে বলে মনে করেন শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ফেল করেছে ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া পরিসংখ্যান বিষয়ে ২৪ শতাংশ ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। সিলেট অঞ্চলে আগাম বন্যাও এইচএসসির ফলাফলে প্রভাব রেখেছে বলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ধারণা। সিলেট বোর্ডের অধীনে চার জেলার মধ্যে সিলেটে ৭৬ দশমিক ১৩, হবিগঞ্জে ৬৯ দশমিক ১৩, মৌলভীবাজারে ৬৫ দশমিক ৮৩ ও সুনামগঞ্জে ৭৩ দশমিক ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী এইচএসসি পাস করেছে এবার। ছেলেদের টপকে এগিয়ে মেয়েরা গত বছর ছেলেরা ভালো ফল করলেও এবার সিলেটে মেয়েরা পাসের হারে এগিয়ে। ছেলেদের মধ্যে পাসের হার যেখানে ৭০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, মেয়েদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ পাস করেছে। আর বিভাগভিত্তিক হিসাবে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৭৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ, মানবিক বিভাগে ৬৭ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৮৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এবার পাস করেছে। জিপিএ-৫ পাওয়া ৭০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬০৪ জনই বিজ্ঞানের। সিলেটের ২৬৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এবার আট কলেজের সব পরীক্ষার্থী পাস করেছে। কেউ পাস করেনি এমন কোনো কলেজ এ বোর্ডে নেই। চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ‘ফল বিপর্যয়’ হয়েছে। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার যেখানে ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, সেখানে কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। শুধু তা-ই নয়, মানবিক শাখায় এই বোর্ডের পাসের হার মাত্র ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আজ রোববার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় কুমিল্লা বোর্ডের খারাপ ফলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুমিল্লায় কেন এত খারাপ হলো সেটি মূল্যায়ন করে দেখবেন। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা মনে করছেন, ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করায় ফল খারাপ হয়ে থাকতে পারে। তাঁরা এটি মূল্যায়ন করে দেখবেন। ফলাফলে দেখা যায়, পাসের হারে সবার শীর্ষে আছে সিলেট বোর্ড। এই বোর্ডে পাসের হার ৭২ শতাংশ। অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে পাসের হার ঢাকা বোর্ডে ৬৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ, যশোরে ৭০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৬১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, বরিশালে ৭০ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৬৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এবারের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় সব সূচকেই কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল বিপর্যয় হয়েছে। পাসের হার, জিপিএ-৫ ও শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এ বছর কমেছে। শূন্যভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও তিনটি। ইংরেজিতে ফেলের কারণে এ বোর্ডে ফল বিপর্যয় হয়েছে। আজ রোববার বেলা দেড়টায় বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ। সারা দেশের আটটি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে কুমিল্লার ফলাফল সবার নিচে। গত ১০ বছরের মধ্যে এ বোর্ডে এইচএসসিতে এত বাজে ফল হয়নি। ফল বিপর্যয় প্রসঙ্গে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মমিনুল হক চৌধুরী আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইংরেজিতে শিক্ষকের অভাব। যাঁরা আসেন, তাঁদের মান অত্যন্ত নিম্ন। শিক্ষকতাকে এখন পেশা হিসেবে দেখা হয় না। কোচিং, প্রাইভেট-বাণিজ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। যে কারণে ফল তলানিতে ঠেকেছে। এ ছাড়া বোর্ডের বর্তমান ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত দুর্বল। তারা উদ্যোগ নিলে কলেজগুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি ফলাফল ভালো হতো। সব মিলিয়ে জিপিএর কারণে উচ্চশিক্ষায় কুমিল্লার সন্তানেরা পিছিয়ে পড়বে।’ ফল বিশ্লেষণ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছর কুমিল্লা বোর্ডে ১ লাখ ৩৭২ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন পাস করেন। পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫২। এর মধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫৬ এবং মেয়েদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৪৮। বিজ্ঞানে ২০ হাজার ১৬৪ জন পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হয় ১৪ হাজার ৬৬৩ জন। পাসের হার ৭২ দশমিক ৭২। এর মধ্যে ছেলেদের হার ৭১ দশমিক ৯২, মেয়েদের হার ৭৩ দশমিক ৭২। মানবিকে ৪২ হাজার ৩৯৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হন ১৬ হাজার ২৭২ জন। পাসের হার ৩৮ দশমিক ৩৮। ছেলেদের পাসের হার ৩৬ দশমিক ৮৬, মেয়েদের পাসের হার ৩৯ দশমিক ২১। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩৭ হাজার ৮১৫ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হন ১৮ হাজার ৭৬৯ জন। পাসের হার ৪৯ দশমিক ৬৩। ছেলেদের পাসের হার ৪৬ দশমিক ৭৪, মেয়েদের পাসের হার ৫৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এ বছর ৬৭৮ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এর মধ্যে ছেলে ৩২৫ ও মেয়ে ৩৫৩ জন। এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে ৫৫৭ জন, মানবিকে ৩৯ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৮২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৪৯। এবার কমেছে ১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছর এক হাজার ৯১২ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। ইংরেজিতে ফেল প্রায় ৩৮ শতাংশ কুমিল্লা বোর্ডে এ বছর ইংরেজিতে ১ লাখ ৩৮১ জন পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছে ৩৮ হাজার ৮৩ জন। পাস করেছেন ৬২ হাজার ২৯৮ জন। পাসের হার ৬২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ফেল করেছেন ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী। তিনটি কলেজ থেকে পাস করেনি কেউ ফেনীর বেগম শামসুন্নাহার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফয়জুমিয়ারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আপার মডেল কলেজ থেকে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করেনি। কলেজ তিনটিতে যথাক্রমে ১৪, ৪ ও ১৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। সাত কলেজে শতভাগ পাস কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এ বছর সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী পাস করেছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ড. মনসুর উদ্দিন কলেজ, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ছোটতুলাগাঁও মহিলা কলেজ, কুমিল্লা মডেল কলেজ ও চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নিন্দুপুর এম কে আলমগীর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত বছর আটটি কলেজ থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছিলেন। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইংরেজিতে ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ আরও ৪০টি বিষয়ে কমবেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এতে করে সার্বিক পাসের হারের ওপর প্রভাব পড়েছে। যে কারণে অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার কম।’ এক নজরে কুমিল্লা বোর্ড সাল পাসের হার ২০১৭ ৪৯.৫২ ২০১৬ ৬৪.৪৯ ২০১৫ ৫৯.৮০ ২০১৪ ৭০.১৪ ২০১৩ ৬১.২৯ ২০১২ ৭৪.৬০ ২০১১ ৬৮.৬৮ ২০১০ ৭৩.১৩ ২০০৯ ৬৬.৯৯ ২০০৮ ৭৭.৩৩ ২০০৭ ৬৫.৭৫ এবারের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় সব সূচকেই কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল বিপর্যয় হয়েছে। পাসের হার, জিপিএ-৫ ও শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এ বছর কমেছে। শূন্যভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও তিনটি। ইংরেজিতে ফেলের কারণে এ বোর্ডে ফল বিপর্যয় হয়েছে। আজ রোববার বেলা দেড়টায় বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ। সারা দেশের আটটি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে কুমিল্লার ফলাফল সবার নিচে। গত ১০ বছরের মধ্যে এ বোর্ডে এইচএসসিতে এত বাজে ফল হয়নি। ফল বিপর্যয় প্রসঙ্গে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মমিনুল হক চৌধুরী আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইংরেজিতে শিক্ষকের অভাব। যাঁরা আসেন, তাঁদের মান অত্যন্ত নিম্ন। শিক্ষকতাকে এখন পেশা হিসেবে দেখা হয় না। কোচিং, প্রাইভেট-বাণিজ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। যে কারণে ফল তলানিতে ঠেকেছে। এ ছাড়া বোর্ডের বর্তমান ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত দুর্বল। তারা উদ্যোগ নিলে কলেজগুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি ফলাফল ভালো হতো। সব মিলিয়ে জিপিএর কারণে উচ্চশিক্ষায় কুমিল্লার সন্তানেরা পিছিয়ে পড়বে।’ ফল বিশ্লেষণ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছর কুমিল্লা বোর্ডে ১ লাখ ৩৭২ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন পাস করেন। পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫২। এর মধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫৬ এবং মেয়েদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৪৮। বিজ্ঞানে ২০ হাজার ১৬৪ জন পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হয় ১৪ হাজার ৬৬৩ জন। পাসের হার ৭২ দশমিক ৭২। এর মধ্যে ছেলেদের হার ৭১ দশমিক ৯২, মেয়েদের হার ৭৩ দশমিক ৭২। মানবিকে ৪২ হাজার ৩৯৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হন ১৬ হাজার ২৭২ জন। পাসের হার ৩৮ দশমিক ৩৮। ছেলেদের পাসের হার ৩৬ দশমিক ৮৬, মেয়েদের পাসের হার ৩৯ দশমিক ২১। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩৭ হাজার ৮১৫ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হন ১৮ হাজার ৭৬৯ জন। পাসের হার ৪৯ দশমিক ৬৩। ছেলেদের পাসের হার ৪৬ দশমিক ৭৪, মেয়েদের পাসের হার ৫৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এ বছর ৬৭৮ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এর মধ্যে ছেলে ৩২৫ ও মেয়ে ৩৫৩ জন। এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে ৫৫৭ জন, মানবিকে ৩৯ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৮২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৪৯। এবার কমেছে ১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছর এক হাজার ৯১২ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। ইংরেজিতে ফেল প্রায় ৩৮ শতাংশ কুমিল্লা বোর্ডে এ বছর ইংরেজিতে ১ লাখ ৩৮১ জন পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছে ৩৮ হাজার ৮৩ জন। পাস করেছেন ৬২ হাজার ২৯৮ জন। পাসের হার ৬২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ফেল করেছেন ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী। তিনটি কলেজ থেকে পাস করেনি কেউ ফেনীর বেগম শামসুন্নাহার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফয়জুমিয়ারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আপার মডেল কলেজ থেকে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করেনি। কলেজ তিনটিতে যথাক্রমে ১৪, ৪ ও ১৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। সাত কলেজে শতভাগ পাস কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এ বছর সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী পাস করেছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ড. মনসুর উদ্দিন কলেজ, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ছোটতুলাগাঁও মহিলা কলেজ, কুমিল্লা মডেল কলেজ ও চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নিন্দুপুর এম কে আলমগীর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত বছর আটটি কলেজ থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছিলেন। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইংরেজিতে ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ আরও ৪০টি বিষয়ে কমবেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এতে করে সার্বিক পাসের হারের ওপর প্রভাব পড়েছে। যে কারণে অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার কম।’ এক নজরে কুমিল্লা বোর্ড সাল পাসের হার ২০১৭ ৪৯.৫২ ২০১৬ ৬৪.৪৯ ২০১৫ ৫৯.৮০ ২০১৪ ৭০.১৪ ২০১৩ ৬১.২৯ ২০১২ ৭৪.৬০ ২০১১ ৬৮.৬৮ ২০১০ ৭৩.১৩ ২০০৯ ৬৬.৯৯ ২০০৮ ৭৭.৩৩ ২০০৭ ৬৫.৭৫ রোববার ঘোষিত এইচএসসির ফলাফলে চট্টগ্রাম বোর্ডে পাস করেছে ৬১ দশমিক ০৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে একহাজার ৩৯১জন। গতবছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৬০ শতাংশ; দুই হাজার ২৫৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। চট্টগ্রামে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা পাসের হারে এগিয়ে আছে। তবে জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক দিয়ে এগিয়ে আছে ছেলেরা। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাহবুব হাসান রোববার দুপুরে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ বোর্ড থেকে এবার ৮২ হাজার ৪১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫০ হাজার ৩৪৭ জন। এর মধ্যে ছাত্রীদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৫ শতাংশ; ছাত্রদের ক্ষেত্রে ৫৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬২৪ জন ছাত্রী, ছাত্র ৭৬৭ জন। চট্টগ্রাম বোর্ডের ২৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এবার একটি কলেজে তভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার বিজ্ঞানে পাস করেছে ৭৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, মানবিকে ৪৭ দশমিক ৪৯ এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিজ্ঞানে গতবারের চেয়ে পাসের হার বাড়লেও মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় কমেছে। গতবার বিজ্ঞানে ৭৬ দশমিক ৬৬, মানবিকে ৫১ দশমিক ৬২ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭০ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। গত বছরের তুলনায় এবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাসের হার বেড়েছে। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাসের হার ৯৯.৬২ শতাংশ। রোববার প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর ১ হাজার ৮২১ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ৮১৮ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯৫৪ জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২১ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ১০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। এদিকে ফল প্রকাশের পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। তাসলিমা ফারিয়া নামের বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলে, ভালো ফল হওয়ায় আমি খুব আনন্দিত। এখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে হবে। আরেক শিক্ষার্থী সাবিনা মাসফিয়া বলে, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এই ভালো ফল। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে যেন আরো ভালো কিছু করতে পারি সেজন্য সবার দোয়া চাই। এইচএসসি পরীক্ষায় এবার রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ-৫ এ এগিয়ে রয়েছে ছেলেরা। আর পাসের হারে এগিয়ে আছে মেয়েরা। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে ছেলেদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং মেয়েদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ০১ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রের সংখ্যা ২ হাজার ৯৩৯ জন ও ছাত্রীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৫৫ জন। এইচএসসি পরীক্ষায় গত ছয় বছরের ব্যবধানে পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। ২০১১ সাল থেকে পাসের হার কমছে রাজশাহীতে। ওই বছর এই বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৯ দশমিক ০১ শতাংশ। এ বছর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। এবার সেই হার কমেছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এ বছর রাজশাহীতে পাসের হার ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ। আজ রোববার দুপুরে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তরুণ কুমার সরকার। তরুণ কুমার সরকার জানান, এ বছর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৯৪ জন শিক্ষার্থী। এটি গত বছরের চেয়ে ৭৭৯ জন কম। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৭৩ জন শিক্ষার্থী। এ বছর মোট এক লাখ ২১ হাজার ৮৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬৭ হাজার ৬২ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৫৪ হাজার ৭৭৪ জন। গত বছর এই শিক্ষাবোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ জন শিক্ষার্থী। চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের বাইরে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ। রোববার দুপুরে প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। দেশের বাইরে এ বছর সাতটি প্রতিষ্ঠানের ২৫৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ২৪৪ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৬ জন। সাতটি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে একটি প্রতিষ্ঠানে। এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায়ও বিপর্যয় ঘটেছে কুমিল্লায়। এ বছর অংশগ্রহণকারীদের ৫০ শতাংশও পাস করতে পারেননি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইংরেজিতেই ফেল করেছে ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। আজ রোববার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ওই ফলে দেখা যায়, মাত্র ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ পাস করেছে কুমিল্লা বোর্ডে, যা শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এক লাখ এক হাজার ৬৩৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে অংশগ্রহণ করেছে এক লাখ ৩৭২ জন। পাস করেছে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ২৩ হাজার ৭৯২ জন এবং ছাত্রী ২৫ হাজার ৯১২ জন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র ৬৭৮ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৩৫৩ ও ছাত্রের সংখ্যা ৩২৫ জন। পাঁচ বছরের মধ্যে কুমিল্লায় এ পাসের হার সর্বনিম্ন। গত বছর পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ জানিয়েছেন, গতবারের তুলনায় ফল খারাপ। এর কারণ হচ্ছে ইংরেজিতে বিপর্যয়। কেবল ইংরেজিতেই ফেল করেছে ৩৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী। ইংরেজির ফল খারাপ হওয়ার কারণেই কুমিল্লার ফল খারাপ হয়েছে। চলতি বছর মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায়ও বিপর্যয় ঘটে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে। পাসের হার ছিল মাত্র ৫৯ দশমিক শূন্য ৩। তখনো পাসের হার এমনের কারণে ইংরেজি ও গণিতে ফেলকে দায়ী করে শিক্ষা বোর্ড। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হারে এগিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। রোববার দুপুরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। এ বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এই শিক্ষা বোর্ড থেকে মোট ৯৭ হাজার ১৪ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেয়। এর মধ্যে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ২ হাজার ৬৬৯ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ৭৭ দশমিক ০২ শতাংশ, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ৭২ শতাংশ, ঢাকা ডিআইবিএস ও রাজশাহী বোর্ডের পাসের হার ৭১ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ, বরিশালে ৭০ দশমিক ২৮ শতাংশ, যশোরে ৭০ দশমিক ০২ শতাংশ, ঢাকায় ৬৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, দিনাজপুরে ৬৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৬১ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং কুমিল্লায় ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত ২ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে শুরু হয় এই পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১৫ মে। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন। আর ছাত্রী পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১০টি শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হারে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে আছেন। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্য উল্টো চিত্র দেখা গেছে। এখানে এগিয়ে আছেন ছাত্ররা। আজ রোববার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। এবারে ১০ বোর্ডের গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। এবার মোট ১১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্য পাস করেছে ৮ লাখ ১ হাজার ৭৭১ জন। গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এর মধ্য ছাত্রীদের পাসের হার ৭০.৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। ডিআইবিএসসহ এবারের মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। এর মধ্যও ছাত্রদের সংখ্যা ২০ হাজার ৫৩৫ জন। ছাত্রীরা জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৭ হাজার ৪৩৪ জন। এবারের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডর অধীন শুধু এইচএসসি পরীক্ষার গড় পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এখানেও পাসের হার কমেছে। এবারের জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৩ হাজার ২৪২ জন। গতবার পেয়েছিল ৪৮ হাজার ৯৫০ জন। অন্যদিকে, মাদ্রাসা ও কারিগরিতেও গতবারের চেয়ে ফল খারাপ হয়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডে এবার পাসের হার ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ। এ বোর্ডে ১১ শতাংশের বেশি পাসের হার কমেছে। এখানে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৮১৫ জন। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৮৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এখানে জিপিএ পেয়েছেন ২ হাজার ৬৬৯ জন। অবশ্য তুলনামূলক ফল খারাপে বিস্মিত নন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, এসএসসির মতো এখানে নতুন পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে মোবাইলে ফলাফল জানা যাবে। ২৪ থেকে ৩০ জুলাই ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আগের মতোই নির্ধারিত পদ্ধতিতে টেলিটক থেকে আবেদন করতে হবে। গত ২ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৫ মে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১২ লাখ। বিদেশের সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫৯ জন শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবার। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৪৪ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৬ জন। গত বছর বিদেশের কেন্দ্রে পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সেই হিসেবে বিদেশ কেন্দ্রে পাসের হার বেড়েছে। তবে সার্বিকভাবে এবার সব বোর্ড মিলিয়ে পাসের হার গতবারের ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। বিদেশের কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে এবার। উচ্চ মাধ্যমিকে এবার সব বোর্ড মিলিয়ে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেওয়ার পর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি গত এসএসসি পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে পাসের হার কিছু কমেছিল। সেই পদ্ধতি এবার এইচএসসিতে প্রয়োগ করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা যায়, ৭২ শতাংশ পাসের হার নিয়ে আট শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সিলেট বোর্ড। আর কুমিল্লা বোর্ডে পাস করেছে সবচেয়ে কম- ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী। ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ পাসের হার নিয়ে গতবারের মত এবারও আট বোর্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে রাজশাহী বোর্ড এবং ৭০ দশমিক ২৮ নিয়ে বরিশাল বোর্ডের অবস্থান তৃতীয়। এবছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৭৭ হাজার ০২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডের বোর্ডে ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এক নজরে ফলাফল ২০১৭ ২০১৬ বোর্ড পাশের হার (%) জিপিএ-৫ (জন) পাশের হার (%) জিপিএ-৫ (জন) ঢাকা ৬৯.৭৪ ১৮৯৩০ ৭৩.৫৩ ২৮১১০ রাজশাহী ৭১.৩০ ৫২৯৪ ৭৫.৪০ ৬০৭৩ কুমিল্লা ৪৯.৫২ ৬৭৮ ৬৪.৪৯ ১৯১২ যশোর ৭০.০২ ২৪৪৭ ৮৩.৪২ ৪৫৮৬ চট্টগ্রাম ৬১.০৯ ১৩৯১ ৬৪.৬০ ২২৫৩ বরিশাল ৭০.২৮ ৮১৫ ৭০.১৩ ৭৮৭ সিলেট ৭২.০০ ৭০০ ৬৮.৫৯ ১৩৩০ দিনাজপুর ৬৫.৪৪ ২৯৮৭ ৭০.৬৪ ৩৮৯৯ মাদ্রাসা বোর্ড ৭৭.০২ ১৮১৫ ৮৮.১৯ ২৪১৪ কারিগরি বোর্ড ৮১.৩৩ ২৬৬৯ ৮৪.৫৭ ৬৫৮৭ ডিআইবিএস (ঢাকা) ৭১.৫৮ ২৪৩ ৮১.৪৬ ৩২৫ মোট ৬৮.৯১ ৩৭৯৬৯ ৭৪.৭০ ৫৮২৭৬ আট শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী এবার ঢাকা বোর্ডে। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯৩০ জন। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ অর্জনে এরপরই রাজশাহী বোর্ডের শিক্ষার্থীদের অবস্থান। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫ হাজার ২৯৪ জন। এবার মাদ্রাসা বোর্ডে ১ হাজার ৮১৫ জন, কারিগরি বোর্ডে ২ হাজার ৬৬৯ জন এবং ঢাকা ডিপ্লোমা-ইন-বিজনেস স্টাডিসে (ডিআইবিএসে) ২৪৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এসএসসির পর এবছর এইচএসসি পরীক্ষাতেও সব থেকে খারাপ ফল করেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে এবার পাসের হার সব থেকে কম। পাস করেছে ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৭৮ জন। এ বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩৭২ জন। পাস করেছে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। ইংরেজিতে ফেল করেছে ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৭২.৭২ শতাংশ, মানবিক বিভাগ থেকে ৩৮.৩১ শতাংশ ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৪৯.৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ২০১৬ সালে এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ফল কমেছে ১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষাতেও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল সব থেকে খারাপ ছিল। এসএসসিতে এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৫৯ দশমিক ০৩। গতবারের চেয়ে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩১৬টি কমেছে। আর কোনো শিক্ষার্থীই পাশ করেত পারেনি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৪৭টি। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর ৫৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮৪৮টি। আর ২০১৫ সালে সবাই পাস করেছিল এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ১৩৩টি। অন্যদিকে এবার ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীই এইচএসসি পাস করতে পারেনি। গত বছর এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২৫টি। চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। আজ রবিবার সকাল ১০টার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই পরীক্ষার ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, সারা দেশে গড় পাসের হার দাড়ায় ৬৮.৯১ শতাংশ এবং মোট জিপিএ ৫ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৭.২০ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৮১৫ জন। কারিগরী শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২৬৬৯ জন। এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় আটটি সাধারণ, একটি মাদরাসা ও একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে দেশের ৭২টি প্রতিষ্ঠানে একজনও পাস করেনি। বরং গত বছরের এর চেয়ে এবার শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭২টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৫টি, এবার বেড়েছে ৪৭টি প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষায় শতভাগ পাস করার কৃতিত্ব রয়েছে ৫৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। তবে গতবারের চেয়ে এই সংখ্যা এবার কমেছে। গত বছর শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৮৪৮টি। এবার কমেছে ৩১৬টি। তিনি আরো বলেন, এবার মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৭৭১টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৩৪৫টি। এবার বেড়েছে ৪২৬টি প্রতিষ্ঠান। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। রোববার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। এবার আটটি সাধারণ বোর্ডে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪২ জন। মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ০২, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৮১৫ জন। কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ জন। এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় ২ এপ্রিল। এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন। চলতি বছরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে পাসের হার ও জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এবারের পাসের হার ৬১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। পাস করেছেন ৫০ হাজার ৩৪৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৯১ শিক্ষার্থী। গতবার পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২ হাজার ২৫৩ জন। এবার বিজ্ঞানে বিভাগে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পাসের হার ৬৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আজ রোববার দুপুরে বোর্ড মিলনায়তনে ফলাফল ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বছর ২৩৮টি কলেজের ৮৩ হাজার ২২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ছাত্র পাস করেছেন ২৪ হাজার ৭১৬ জন এবং ছাত্রী পাস করেছেন ২৫ হাজার ৬৩১ জন। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পাবর্ত্য জেলার ৯৮ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নগরসহ চট্টগ্রামের ৬১টি কেন্দ্রে ৬১ হাজার ৪৪২ জন, কক্সবাজার জেলার ১৪টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৯৯ জন, রাঙামাটি জেলার ১০টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ১১৫ জন, খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৮৬৬ জন এবং বান্দরবান জেলার ৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (http://bise-ctg.portal.gov.bd/), মুঠোফোনে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ফলাফল জানতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে এসএসসির মত এবার এইচএসসিতেও ফল বিপর্যয় ঘটেছে। পাসের হার গতবারের ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ২০ হাজার ৩০৭ জন। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর ৫৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন, গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮৪৮টি। আর ২০১৫ সালে এক হাজার ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছিল। অন্যদিকে ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীই এবার এইচএসসি পাস করতে পারেনি। গতবছর এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২৫টি। শতভাগ পাস-ফেল সবাই পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বোর্ড সবাই ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪০ ঢাকা ১৭ ২২ রাজশাহী ১১ ৭ কুমিল্লা ৩ ৪১ যশোর ৪ ১ চট্টগ্রাম - ৬ বরিশাল ২ ৮ সিলেট - ১১ দিনাজপুর ১৬ ২৫০ মাদ্রাসা বোর্ড ১৯ ১৪৬ কারিগরি বোর্ড - ৫৩২ মোট ৭২ চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করেছে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এবার ২ দশমিক ৮২ ভাগ বেশি পাস করেছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ফলাফলে দেখা যায়, মাদরাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় আট হাজার ৮৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪২ জন। এবার গতবারের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পাস করেছে। গত ২ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে শুরু হয় এই পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১৫ মে। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন। আর ছাত্রী পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৭ সালের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফল দেখে রীতিমতো বিস্মিত না হয়ে পারলাম না। যখন দেখলাম, পাসের হার মাত্র ৬৮ দশমিক ৯১, তখন মনে প্রশ্ন জাগল—এই ফল বিপর্যয়ের কারণ কী? এতসংখ্যক শিক্ষার্থী কেন ফেল করল? একটা বিষয় আমার কাছে স্পষ্ট মনে হচ্ছে, এই ফল বিপর্যয়ের দায় শুধু শিক্ষার্থীদের নয়। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে না, সারা দিন ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপে ব্যস্ত থাকে—এ কারণে তাদের ফল খারাপ হয়েছে, এটা আমি মানতে নারাজ। একটা বিষয় আপনারা লক্ষ করবেন, ২০১৭ সাল থেকে এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্নে ১০ নম্বর বৃদ্ধি ও বহুনির্বাচনী প্রশ্নে ১০ নম্বর কমিয়েছে আনা হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে পরীক্ষার সময় বণ্টন। এমনকি বহুনির্বাচনী ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যকার ১০ মিনিটিরে বিরতিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষায় নতুন মানবণ্টনে ব্যবহারিক বিষয়গুলোয় আটটির মধ্যে পাঁচটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ছিল ২৫টি। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। এ ছাড়া যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক নেই, সেসব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন ছিল ১১টি, উত্তর দিতে হয়েছে সাতটি প্রশ্নের। বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ৩০টির প্রতিটির প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। নতুন এই নিয়মে এইচএসসি ও সমমানের ব্যবহারিক মানবণ্টন ছিল এসএসসি ও সমমানের মতো সৃজনশীল ৫০, বহুনির্বাচনী ২৫ এবং ব্যবহারিক ২৫—মোট ১০০ নম্বর। এর আগে যা ছিল সৃজনশীল ৪০, বহুনির্বাচনী ৩৫ ও ব্যবহারিক ২৫। বহুনির্বাচনী থেকে ১০ কমিয়ে সৃজনশীল অংশে ১০ নম্বর বাড়ানো হয়েছে। এর আগে যেখানে ব্যবহারিক পরীক্ষাহীন বিষয়গুলোতে বহুনির্বাচনী অংশের নম্বর ছিল ৪০। একই সঙ্গে সৃজনশীল অংশের নম্বর ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৭০ করা হয়েছে। তার মানে কি দাঁড়াল, সম্পূর্ণ নতুন এক মানবণ্টনে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষা। ভাবছেন কি একবার বিষয়টি? এই নতুন নিয়মে পরীক্ষা দিতে অবশ্যই ঝামেলায় পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। মাত্র দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে শিক্ষার্থীদের লিখতে হয়েছে সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর। এটা কি চাট্টিখানি কথা! নতুন এ নিয়মে আমরা পেলাম মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের মোট আট হাজার ৮৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন। জিপিএ ৫ পেল ৩৩ হাজার ২৪২ জন। যেখানে গতবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, এবার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম পাস করেছে। যাই হোক, কর্তৃপক্ষের আবার এক নিয়মে ফেঁসে গেল শিক্ষার্থীরাই। যারা পাস করতে পারল না, তারা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে কতটা মুখ-লজ্জায় পড়েছে, তা অনুমান করা আমার-আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। যে ফেল করেছে, সে-ই কেবল তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ফেল করার যন্ত্রণা কতটা। কিন্তু প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মানবণ্টনের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যাঁরা আছেন, তাঁরা কি একবারও ভেবেছেন, নতুন নিয়মে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীরা কি বেকায়দায় পড়তে পারে। আপনারা কি এর দায় এড়াতে পারেন? এই মানবণ্টনের সিদ্ধান্তই শুধু এই ফল বিপর্যয়ের মূল কারণ নয়। একবার আপনারা কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্ন তৈরি করবেন, আরেকবার বোর্ডভিত্তিক, এক কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন তো আরেকবার সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেবেন, তার ফল কী হতে পারে? নিশ্চিত একেক বছর একেক নিয়মে অভিযোজিত হতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হয়। এর মাশুলও দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবারও কমেছে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার। কমেছে জিপিএ-৫ ও। এ বছর বোর্ডের পাসের হার ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৯৪ জন। গত বছর এ বোর্ডের পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পায় ৬ হাজার ৭৩ জন পরীক্ষার্থী। এর আগে ২০১৫ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫৪। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ২৫০ জন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুসারে, এ বছর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ২৩ হাজার ৬১৫ জন পরীক্ষার্থী। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ সাত হাজার ৯০ জন। এক বছরে পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১৬ হাজার ৫২৬ জন। এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬৮ হাজার ১২৯ জন ছাত্র এবং ৫৫ হাজার ৪৮৭ জন ছাত্রী। এরমধ্যে নিয়মিত ৯৯ হাজার ৭৮০ জন, অনিয়মিত ২২ হাজার ৫৬২ জন। এবছর বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিল ৩৩ হাজার ৮৩৬ জন। এ ছাড়া মানবিক বিভাগে ছিল ৬৮ হাজার ৫৪৮ জন এবং বাণিজ্যে ২১ হাজার ২৩২ জন। ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই গতবারের চেয়ে কমেছে। ১০টি বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। গতবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ এবং মোট জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণভবনে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি এই তথ্য জানান। এবার কারিগরিতে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩, সাধারণ আটটি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ এবং মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ০২। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা শেষে ৫৯ দিনের মাথায় এবার ফল প্রকাশ করা হলো। মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ কিছুটা কমেছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫৫০ জন কমেছে। ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল আজ রবিবার প্রকাশ হয়। সকাল ১০টার পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, সারা দেশে এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। কিন্তু গত বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৬৮.৯১ শতাংশ। কিন্তু গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার গড় পাসের হারও কমেছে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। উল্লেখ্য, এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিক্ষার মান বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ রবিবার সকালে গণভবনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। এই বয়সে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইন দেওয়া। এ সময় ছেলেমেয়েরা যেন মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিরক্ষরমুক্ত করে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারও সে আদর্শকে লালন করে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কমেছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'এবার পাস কম করায় আমরা বিস্মিত হইনি। পরীক্ষার খাতা ভালোভাবে মূল্যায়ন করার কারণেই এ ফল হয়েছে। ' আজ রবিবার সকাল ১০টার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পরীক্ষার ফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় তিনি এ কথা বলেন। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, 'গত মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। এসএসসিতে গতবারের চেয়ে ৮ শতাংশ পাস করেছে। সে ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এইচএসসিতে কম খারাপ হয়েছে। এটাকে আমি সাফল্য বলে মনে করি। ’ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘খাতা দেখার বিশেষ মূল্যায়নের কারণেই ফলের এই পার্থক্য হচ্ছে। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই, এটা আমাদের সাফল্য। ভবিষ্যতে এটা ধীরে ধীরে একটা স্থির অবস্থায় এসে পড়বে। ’ তিনি আরো বলেন, ‘খাতা দেখার এই পদ্ধতিতে সবাই একমত হয়েছে। সংবাদও এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করেছে। এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করেছে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এবার ২ দশমিক ৮২ ভাগ বেশি পাস করেছে। মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন। আর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬। গত বছরের চেয়ে এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫৫০ জন কমেছে। ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল আজ রবিবার প্রকাশ হয়। সকাল ১০টার পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, সারা দেশে এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। কিন্তু গত বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৬৮.৯১ শতাংশ। কিন্তু গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার গড় পাসের হারও কমেছে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। উল্লেখ্য, এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

Share this:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Designed By SUMIT SUTRADHAR & Distributd By OJANAIT